মুরাদনগরের হাসেনা বেগম : পুকুরের পাড়ে কলা ও সবজি চাষে সফল নাম

0

সংসারের আয় উন্নতির জন্য সবাই চেষ্টা করেন, কাজও করেন সে অনুযায়ী। এই চেষ্টার ভিরে কেউ সফল হন, কাউকে আবারো শুরু করতে হয়। এই সফলতার তালিকায় অন্যতম একটি নাম মোসাঃ হাসেনা বেগম। কুমিল্লার মুরাদনগর উপজেলার গাইটুলি এলাকার বাসিন্দা জহিরুল ইসলাম এর স্ত্রী, ৩ ছেলে-মেয়ে নিয়ে সংসার তার। হাসেনা বেগমের বিদেশ ফেরত স্বামির পেশায় কৃষিজীবি, ৫০ শতাংশের পুুকুর মাছও চাষ করতেন। কিন্তু মাছ চাষ করে লাভের মুখ দেখা হয়নি কখনো। ক্রমাগত মাছমৃত্যু ও আশানুরুপ ফল না পেয়ে ২০২১ সালে সিসিডিএর স্থানীয় সমিতিতে মাঠ কর্তকর্তার কাছে তার সমস্যার কথা জানান। ঋণ গ্রহণের পাশাপাশি মাঠ কর্মকর্তা এসইপি প্রকল্পের উত্তম মৎস্যচাষ বিষয়ক কর্মশালা ও প্রশিক্ষণে যোগ দেয়ার পরামর্শ দেন। কথানুযায়ী হাসেনা বেগম এসইপি প্রকল্পের কর্মশালা ও প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেন।

হাসেনা বেগম বলেন, ‘সিসিডিএর মাছচাষের ট্রেনিং নেয়ার পর আমার ভুল ভাঙ্গে। আগে নিরাপদ খাবার ব্যবহার করতাম না, গোবর দিতাম। আবার পুকুরের চারপাশে ঝোপ জংগল ছিলো যার কারণে প্রাকৃতিক খাবারও তৈরী হতো না। প্রশিক্ষণ থেকে ফিরে স্বামীর সাথে আলোচনা করে পুকুরের পাড় পরিষ্কার করে সেখানে সবজি চাষ করা শুরু করি। এরই মধ্যে এসইপি হতে পুকুরে মাছ ও পাড়ে সবজি চাষ বিষয়ে প্রদর্শনীও পেয়েছি। এখন আলহামদুলিল্লাহ পুকুরের পানিও ভালো যার কারণে মাছও ভালো আছে। আবার পাড়ের সবজি বিক্রি করে আমার সংসারের আয়ও বেড়েছে।’

এখন বিনামুল্যে নিয়মিত পানির গুনাগুন সম্পর্কে জানতে ও প্রয়োজনীয় পরামর্শ পাচ্ছেন বলেও জানান হাসেনা বেগম। বর্তমানে হাসেনা বেগমের ৫০ শতাংশের মাছের খামারের পাড়ে কলা, টমেটো, কাচা মরিচ, পেপে, পুঁইশাক, লাউ, ঢেঁড়স ইত্যাদি সবজি চাষ করছেন। মৌসুমে ১টি কলার ছড়ি/কাঁদি প্রায় ৮০০-১২০০টাকা পর্যন্ত বিক্রয় করেন বলে জানান হাসেনা বেগম। মাছচাষের পাশাপাশি এই আয় তাকে অর্থনৈতিকভাবে স্বাবলম্বি করেছে বলে মনে করনে তিনি।

ভবিষ্যতেও নিরাপদ খাদ্য উৎপাদনে ভালো উপাদান এর ব্যবহার অব্যাহত রাখবেন এবং মাছ ও সবজি চাষ করবেন বলে জানান তিনি।

এখন হাসেনা বেগম-জহিরুল ইসলাম দম্পতির মাছ ও সবজি চাষ একই সাথে চলছে। মাছের চাষে সবজি চাষ করে তারা এলাকায় অনুসরনীয় হয়ে আছেন। এছাড়াও নিরাপত্তা সামগ্রী ব্যবহার, চুন-লবন ব্যবহার, প্রাথমিক চিকিৎসা বাক্স, নিয়মিত পানি পরীক্ষা, পুকুরের জৈব সুরক্ষা নিশ্চিত করাসহ এসইপি প্রকল্পের পরিবেশগত ভালো চর্চাগুলোও বাস্তবায়ন ও অব্যাহত রেখেছেন তিনি। যার ফলে এলাকায় মাছ ও সবজি মিশ্র চাষে সফল নাম মডেল খামারি হাসেনা বেগম। সাধারণ নারী থেকে আজ হাসেনা বেগম একজন আদর্শ উদ্যোক্তা।

Post a Comment

0 Comments
Post a Comment (0)

Search This Blog

To Top